Wednesday, July 6, 2016
ব্রায়ার
পাইপে প্রিয় কবি
কেউ চলে গেল আর কবি নীরব থাকলো
–
কাঁদছি
কেননা ভালবেসেছি
কেননা হারিয়ে ফেলেছি
রাঙাদা বলল – তুমি সজল
বন্দ্যপাধ্যায় পড়েছ ?
বললাম – না । একদিন বাড়ি এসো ,
দেবো তোমাকে ।
তারপর সাইকেল চালিয়ে জল শহরের
অলিগলি খুঁজতে খুঁজতে হাজির হলাম । শুরু হল আমার কবিতা যাপন । পড়ে ফেললাম নির্বাচিত
কবিতা - সজল বন্দ্যপাধ্যায় ।
আমি কি চমকে উঠেছিলাম , না মনে
পড়ছে না ! তবে একটা রাস্তা পেয়েছিলাম । আসলে আমার ছোট হয়ে আসা লেখাগুলো আদৌ কি
কবিতা হয়ে উঠছিল কিনা সেই প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলাম ।
কবি বলল – “তোমার লেখার মধ্যে
আমি আমার মেজাজটা খুঁজে পাই । ”
শ্রুতির সেই কবির মেজাজ কি আমি
ধরতে পেরেছিলাম । না , লুঙ্গী পাঞ্জাবী পরা সাদা ফ্রেঞ্চ কাট দাঁড়ির সেই মানুষটার
পাইপ খাওয়ার দিকে মোহিত হয়েছিলাম ।
যেন - হাওয়া ছুঁয়ে যাচ্ছে
হাওয়াকে ছুঁতে পারছি না –
কেউ বলল – এই সব বাইবেল পড়ে কি
হবে !
রাঙাদা বলল – যে মানুষটা গত ৩০
বছর ধরে বাংলায় অনুবাদ করেছে , আমি তার লেখা পড়বো না । সে কেমন কথা !
এতটা ভালোবাসা না থাকলে হয়তো
রাঙাদা বলতে পারতো না । আমি কি পেরেছিলাম তোমাকে ভালবাসতে ? জানিনা , বুঝতে পারছি না । আমাদের পত্রিকা (
এখন বাংলা কবিতার কাগজ) থেকে যখন শুধু তোমাকে নিয়ে সংখ্যা করা হবে বলে
সম্পাদকআমাকেও কিছু লিখতে বলেছিল । আর আমি পারলাম না । প্রিয় কবি , এটাই আমার
ব্যর্থতা । তুমি যখন নীরবে চলে গেলে তখন আবার সেই সম্পাদকের অনুরোধে কলম ধরলাম
দীর্ঘ ১০ বছর পর । ভাবী এখনও কি পারবো আমার সেই প্রথম দেখা মেজাজী মানুষটাকে খুঁজে
বার করতে -
তোমাকে
মনে পড়ছে
অথচ
তোমার মুখটা নয় ।
কিংবা বলার কিছু নেই । সবাইতো
বলেছে , আমি আর কেন নতুন করে কিছু বলব –
আর ছায়া নেই
দেখার কিছু নেই
আসলে –আমি প্রতিবাদ করতে
পারিনা
আমি রাগ করতে পারিনা
আমি ঘেন্না করতে পারিনা
আমি সুখ বোঝাতে পারিনা
আমি দুঃখ বলতে পারিনা
আমি সত্যি কথা বলতে পারিনা
আমি মিথ্যে কথা বলতে চাইনা
আমি কি কিছুই পারিনা ? শুধু
বারবার পড়তে পড়তে “ প্রিয় কবি ” এটাকেই বেশি ভাবতে পারি। আমি কার কথা বলছি । অসংখ্য পাইপের মধ্যে থেকে একটাকে তুলে নিয়ে তার গন্ধ শুকি ।
এতো ব্রায়ার
পাইপ ।
কিংবা মিড় ,
প্রবীরদার (রায়) জমে থাকা প্রচুর বইয়ের মধ্যে থেকে একটা চটি বইকে খুঁজে বার
করেছিলাম ।এক সময় । আজো হাত বোলালে আমার জন্মের আগের গন্ধও পাই ।
শব্দকে জুড়ে জুড়ে বা ভেঙ্গে
চুরে অগোছালো সংসার যেন কবির ঘর হয়ে ওঠে –
আমার
সারা
রাত
সারা
দিন
কাচের
ওপর
একা
শু য়ে
থা কা ।
সারারাত বৃষ্টিতে দাঁড়িয়েও
কখনো তার ছলাৎছল –
সারারাত ছলাৎছল
ছলাৎছল– এভাবে কানে বেজে
ওঠেনি আমার ।
কবি তুমিই তো আবার ভাবিয়েছিলে
–ঘুমোলেও জাগলেও বৃষ্টি সারারাত
যতদিন না সেই কবিতাটি
লেখা হয়ে ওঠে !
বেঁচে তো তুমি আছো । কারণ
আমিতো সেই কবিতাটা এখনো লিখে উঠতে পারিনি । আবার কখনো হটাৎ হাঁটতে হাঁটতে বাড়ি না
ফিরলেও , জানি একদিন ভোর হবে –
আমরাও বাড়ি ফিরলুম না
হাঁটতে হাঁটতে ভাবলুম
টেবিলের ওপর খাবার ঠাণ্ডা
হচ্ছে
পাইপের মধ্যে তামাক ভিজে
যাচ্ছে
কেউ বারান্দার আলো জ্বেলে
ব্লাউজের ছিঁড়ে যাওয়া বোতাম
খুঁজছে
আর আমরা হাঁটছি
আর হাঁটতে হাঁটতে ভোর হচ্ছে –
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment