• গল্পনা


    গল্প নয়। গল্পের সংজ্ঞাকে প্রশ্ন করতে চায় এই বিভাগ। প্রতিটি সংখ্যায় আপনারা পাবেন এমন এক পাঠবস্তু, যা প্রচলিতকে থামিয়ে দেয়, এবং নতুনের পথ দেখিয়ে দেয়।


    সম্পাদনায়ঃ অর্ক চট্টোপাধ্যায়
  • সাক্ষাৎকার


    এই বিভাগে পাবেন এক বা একাধিক কবির সাক্ষাৎকার। নিয়েছেন আরেক কবি, বা কবিতার মগ্ন পাঠক। বাঁধাগতের বাইরে কিছু কথাবার্তা, যা চিন্তাভাবনার দিগন্তকে ফুটো করে দিতে চায়।


    সম্পাদনায়ঃ মৃগাঙ্কশেখর গঙ্গোপাধ্যায় ও তুষ্টি ভট্টাচার্য
  • ক্রোড়পত্র - কবি সজল বন্দ্যোপাধ্যায়


    শ্রুতি আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা কবি সজল বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কবির জীবন, ভাবনা এবং বেশ কিছু নির্বাচিত কবিতা নিয়ে এ সংখ্যার বিশেষ ক্রোড়পত্র।


    সম্পাদনায় - অতনু বন্দ্যোপাধায়
  • কবিতা ভাষান


    ভাষা। সে কি কবিতার অন্তরায়, নাকি সহায়? ভাষান্তর। সে কি হয় কবিতার? কবিতা কি ভেসে যায় এক ভাষা থেকে আরেকে? জানতে হলে এই বিভাগটিতে আসতেই হবে আপনাকে।


    সম্পাদনায় - শৌভিক দে সরকার
  • অন্য ভাষার কবিতা


    আমরা বিশ্বাস করি, একটি ভাষার কবিতা সমৃদ্ধ হয় আরেক ভাষার কবিতায়। আমরা বিশ্বাস করি সৎ ও পরিশ্রমী অনুবাদ পারে আমাদের হীনমন্যতা কাটিয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরটি সম্পর্কে সজাগ করে দিতে।


    সম্পাদনায় - অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায়
  • এ মাসের কবি


    মাসের ব্যাপারটা অজুহাত মাত্র। তারিখ কোনো বিষয়ই নয় এই বিভাগে। আসলে আমরা আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসার কবিকে নিজেদের মনোভাব জানাতে চাই। একটা সংখ্যায় আমরা একজনকে একটু সিংহাসনে বসাতে চাই। আশা করি, কেউ কিছু মনে করবেন না।


    সম্পাদনায় - সোনালী চক্রবর্তী
  • হারানো কবিতাগুলো - রমিতের জানালায়


    আমাদের পাঠকরা এই বিভাগটির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন বারবার। এক নিবিষ্ট খনকের মতো রমিত দে, বাংলা কবিতার বিস্মৃত ও অবহেলিত মণিমুক্তোগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে আনছেন, ও আমাদের গর্বিত করছেন।


    সম্পাদনায় - রমিত দে
  • পাঠম্যানিয়ার পেরিস্কোপ


    সমালোচনা সাহিত্য এখন স্তুতি আর নিন্দার আখড়ায় পর্যবসিত। গোষ্ঠীবদ্ধতার চরমতম রূপ সেখানে চোখে পড়ে। গ্রন্থসমালোচনার এই বিভাগটিতে আমরা একটু সততার আশ্বাস পেতে চাই, পেতে চাই খোলা হাওয়ার আমেজ।


    সম্পাদনায় - সব্যসাচী হাজরা
  • দৃশ্যত


    ছবি আর কবিতার ভেদ কি মুছে ফেলতে চান, পাঠক? কিন্তু কেন? ওরা তো আলাদা হয়েই বেশ আছে। কবি কিছু নিচ্ছেন ক্যানভাস থেকে, শিল্পী কিছু নিচ্ছেন অক্ষরমালা থেকে। চক্ষুকর্ণের এই বিনিময়, আহা, শাশ্বত হোক।


    সম্পাদনায় - অমিত বিশ্বাস
  • ধারাবাহিক উপন্যাস


    বঙ্কিমচন্দ্র


    অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত

Wednesday, July 6, 2016

সমীর রায়চৌধুরী

সমীর  রায়চৌধুরী    
(১ লা নভেম্বর, ১৯৩৩- ২২ শে জুন, ২০১৬) 

হাংরি আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি সমীর রায়চৌধুরী ১৯৩৩ সালের ১ লা নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের পানিহাটিতে জন্মগ্রহণ
করেছিলেনভারতবর্ষের বুকে তাঁর পরিবারের সাংস্কৃতিক মর্যাদা ঈর্ষাযোগ্য। বহু শিল্পী, স্থপতি, চিত্রশিল্পী আর সঙ্গীতজ্ঞের জন্মদাতা এই বংশের অন্যতম রত্ন তাঁর পিতামহ লক্ষ্মীনারায়ণ ছিলেন উত্তরপাড়ার সুবিদিত সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবারের রক্ত সম্বন্ধীয়। তিনি প্রখ্যাত সাহিত্যিক রুডিইয়ার্ড কিপলিং এর পিতা জন লকউড কিপলিং এর কাছ থেকে চিত্রকলা আর ব্রোমাইড কাগজে স্থির চিত্র সংরক্ষণের শিক্ষা গ্রহন করেছিলেন যখন জন অধুনা পাকিস্তান আর তৎকালীন অবিভক্ত ভারতের লাহোর মিউজিয়ামের কিউরেটরের দায়িত্বে ছিলেনতার অধীত বিদ্যাকে প্রসরণ ও বিকাশের তাগিদে ১৮৮০ সালের মধ্যভাগে তিনি ভারতবর্ষের প্রথম ভ্রাম্যমাণ প্রতিচ্ছবি ও চিত্রশিল্প সম্পর্কিত সংস্থাটি স্থাপন করেন যার দায়িত্ব পরবর্তীতে সমীর রায়চৌধুরীর পিতা রঞ্জিত রায়চৌধুরী (১৯১৬-১৯৯১) গ্রহণ করেন তাঁর মা অমৃতা (১৯১৬-১৯৮২) ছিলেন উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণের আলোকপ্রাপ্ত আধুনিক মনস্ক এক পরিবারের আত্মজাশ্রী লক্ষ্মীনারায়ণ রায়চৌধুরী ১৮৮৬ সালে বিহারের পাটনায় একটি স্থায়ী "Photography cum Painting Shop" স্থাপন করেছিলেনপূর্ব মর্যাদার স্মৃতি বিজড়িত এই শহরেই ১৯৬১ সালের নভেম্বর মাসে সমীর রায় চৌধুরী তাঁর সুযোগ্য ভ্রাতা মলয় রায়চৌধুরী, দেবী রায় আর শক্তি চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে জন্ম দেন বাংলা কাব্যসাহিত্যের এক নব্যধারা, হাংরি আন্দোলনের সেই সময় তাঁর পিতৃব্য শ্রী প্রমোদ রায়চৌধুরী ছিলেন পাটনা মিউজিয়ামের চিত্রকলা ও স্থাপত্য বিভাগের সর্বময় দায়িত্বে 


সমীর রায়চৌধুরীর  প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশুনা কলকাতার সিটি কলেজে যেখানে তাঁর সহপাঠীরা ছিলেন দীপক মজুমদার, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আর অনিন্দ্য বাগচি সেইসময় (১৯৫৮) তারা "কৃত্তিবাস" প্রকাশের উদ্যোগে ব্যস্তসমীর রায়চৌধুরী এই গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য হিসাবে নিজেকে আবিষ্কার করেনঅনেকেই আজ হয়তো বিস্মৃত হয়েছেন অথবা অজ্ঞাত আছেন যে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রথম কাব্যগ্রন্থ "একা এবং কয়েকজন" তাঁরই ব্যাক্তিগত উদ্যোগ আর অর্থসাহায্যে প্রকাশিত হয়েছিলোযখন দীপক মজুমদার "কৃত্তিবাস" ছেড়ে যান, আনন্দ বাগচি, উৎপল কুমার বসু, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সমীর রায়চৌধুরীকেও "কৃত্তিবাস" থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়গোষ্ঠী বিচ্যুত হয়ে তিনি "Marine Fisheries Expert" হিসাবে এক জাহাজে চাকরী নেন যে পর্যায়ে তাঁকে অধিকাংশ সময় আরব সাগরেই কাটাতে হতোতাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ "ঝর্নার পাশে শুয়ে আছি"-তে এই পর্বের যাবতীয় রূপকল্প পূর্ণ কাব্যময়তায় চিত্রিতসমুদ্র পরবর্তী অধায়ে তিনি স্থানান্তরিত হন Inland Fisheries-, যা তাঁর মতো কবিকে এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দেয় ভারতবর্ষের প্রত্যন্ত ও প্রান্তিক নদী ও সমুদ্র তীরবর্তী গ্রামগুলিতে বসবাসকারী দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম জেলে, মাঝি, জাল বোনার কারিগর পরিবারগুলির অবিচ্ছ্যেদ্য অংশ হয়ে ওঠার

প্রায় তিন দশক ধরে কবি চাঁইবাসা, দুমকা, ডালটনগঞ্জ, ভাগলপুর, মজহফরপুর, দ্বারভাঙ্গার মতো উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলিতে ঘুরে বেড়িয়েছেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এই জায়গাগুলি প্রায় উপকথার পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এখন কারন সমীর রায়চৌধুরী প্রতিটিকে হাংরি আন্দোলনের যাবতীয় কবি, লেখক, চিত্রশিল্পীদের সম্মিলন আর সৃষ্টিশীলতার কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তুলেছিলেনএই পর্বে তিনি অন্যতম মৌলিক এক চিন্তাধারার জনক হিসাবে আবির্ভূত হন যাকে বিখ্যাত ভাষাবিদ ডঃ প্রবাল দাসগুপ্তা "আধুনান্তিক" নামাঙ্কিত করেছেনউপজাতি অধ্যুষিত প্রদেশে তাঁর বসবাসকালে বহু তরুন লেখক, কবি, শিল্পী এবং চিত্র নির্মাতারা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দ্যেশ্যে যেতেনতাদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্যরা ছিলেন অকটাভিও পাজ, আলেন গিনসবার্গ, পিটার আলেভিস্কি, গ্যারি স্নাইডার, বাসুদেব দাসগুপ্ত, সুবো আচার্য, ত্রিদিব মৈত্র, আলো মিত্র, রাজকমল চৌধুরী, ফনিশ্বরনাথ রেণু, ধর্মভীর ভারতী, সন্তোষকুমার ঘোষ, এইচ এস বাৎস্যায়ন অজান্য, ফাল্গুনী রায় প্রমুখশক্তি চট্টোপাধ্যায় দুই বছরের বেশী তাঁর সঙ্গে চাইবাসায় কাটিয়েছেনবর্তমান যুব কবি সমাজ ও লেখক গোষ্ঠীর সামনে সমীর অন্যতম উল্লেখযোগ্য এক আদর্শ 



সৃষ্টিশীলতা সমীর রায় চৌধুরীর রক্তে বিবিধ রূপে প্রবহমানজীবনের একেবারে শুরুর দিকেই তিনি আর মলয় রায়চৌধুরী বহু নাটকের নির্দেশনা দিয়েছেনতাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ "আমার ভিয়েতনাম" যার প্রেক্ষাপট ভিয়েতনাম নয়, বরং এমন এক ব্যক্তির অনুভূতির উপর আধারিত যে অন্য একটি পৃথিবীর অধিবাসী আর প্রতিদিনের যুদ্ধের অমানবিক, ভয়াল খবরে বিধ্বস্তএর প্রায় এক দশক পর প্রকাশিত হয় তাঁর তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ "জানোয়ার"হাংরি আন্দোলনের লেখকদের মধ্যে তাঁকে শব্দ সৃষ্টি আর ভাষার কৃত্তিমতাকে জাদুকরী উপস্থাপনার গুরু হিসাবে স্বীকার করা হয়১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে সমীর রায়চৌধুরী কলকাতার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যান এবং নিজের পত্রিকা "হাওয়া ৪৯" এর পত্তন করেনসংস্কৃতে "উনপঞ্চাশ বায়ু" অবচেতন মনের অবস্থাকে নির্দেশ করেতিনি "হাওয়া #৪৯" প্রকাশনা সংস্থারও সূচনা করেন যেখানে মলয় রায়চৌধুরী Creative Consultant হিসাবে যোগ দেন  এই পত্রিকা এবং প্রকাশনী লক্ষ্যনীয়ভাবে উন্নাসিক বাংলা সাহিত্য সমাজকে পরিবর্তন করে দেয়এক সময় যে মানুষরা হাংরি আন্দোলনকে নিন্দনীয় ব্যাখ্যা করতেন এমনকি নিচু দেখানোরও চেষ্টা করতেন, তারা পক্ষ পরিবর্তন করে ফেলেন দ্রুতরায়চৌধুরী ভ্রাতাদ্বয়ের জীবন ও সাহিত্যকর্ম গবেষণার বিষয় হয়ে উঠতে শুরু করে

বাংলার অচলায়তন দোষে দুষ্ট সাহিত্যিক পরিমণ্ডলে হাংরি আন্দোলন এক নবজোয়ার এনে দেয়সমীর রায়চৌধুরী তাঁর জীবদ্দশায় ভারতবর্ষে "অধুনন্তিক" বিষয়ক বহু বিতর্ক ও তত্বের ব্যাখ্যা সুস্পষ্ট করেছেন বিভিন্ন লেখার মধ্যে দিয়ে। বিশেষত বাঙালী মানসে, শিল্প-সাহিত্য- সংস্কৃতির আলোচকেরা "অধুনান্তিক"-কে হাংরি আন্দোলনের Post Modern রূপ হিসাবেই দাবী করে থাকেন । তিনিই মূলত ভারতবর্ষের সাহিত্যিক পরিকাঠামোয় উত্তর-আধুনিক কাব্য চর্চার আদি প্রবক্তাপুরাতনপন্থীদের শনাক্তকরনে তাঁর নিজস্ব উদ্ভাবিত শব্দটি ছিল "বহিরঙ্গ" 



২২ শে জুন, ২০১৬ সালে  তাঁর লৌকিক প্রয়াণে ‘বাক্’ পরিবার শোকস্তব্ধ ক্রান্তদর্শী কবিরা তাদের সাহিত্যকর্ম ও চিন্তাধারার জগতেই লাভ করেন অমরত্বতাই সমীর রায়চৌধুরীর আত্মার চিরশান্তি কামনায় "এই মাসের কবি" বিভাগ তাঁকেই উৎসর্গ করে আমরা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করলাম 

প্রণাম সমীর-দা।
                                                          (ভূমিকা ও গ্রন্থনা- সোনালী চক্রবর্তী)

সংস্কৃতি 


ফার্নিচারের দোকানে চেয়ারের হাজিরা ছিল সরাসরি ব্যবসাদারির
খদ্দের আর দোকানদারের গজিয়ে-ওঠা দরদাম
এক অপেক্ষমাণ পণ্য
ছিল মালিকানার অন্বেষণ
অর্থময়তার তাগিদ
আটমাত্রা ছিল দোকানির
ছমাত্রা যোগ করলেন ক্রেতাবিশেষ
বেচাকেনা-কাটতি প্রথক শব্দমালার অধীন
প্রতিমূহূর্ত ক্রয়লেখায় প্রদর্শনযোগ্য
যেমন ক্যাশমেমো নেই কালানুক্রমিকতায় চেয়ারের সমর্থক
তারো আগে কাঠ শ্রম পালিশ সময় সংখ্যা
বা তোরে আগে কেবল অনিশ্চয়তায় সম্ভাবনার প্রস্ফুট
এখন এই রেস্তোঁরায় ক্যাশমেমো বলতে চা টোস্ট ওমলেট
আপ্যায়নের সাময়িকতায় বিশিষ্ট
খদ্দের খুঁজছে অথচ নিজের জন্য নয়
যেভাবে সম্ভাবনা অনিশ্চয়তায় প্রস্ফুট
যেভাবে আরামকেদারা হয়ে উঠেছিল রক্ষণকামী
স্বপ্নের চেয়ে স্মৃতি রোমন্হনে পটু
যেভাবে প্রতিমুহূর্তে জৈবিক হয়ে উঠতে চায় সাংস্কৃতিক!
হাতলওলা চেয়ারে পেয়ে বসে অহংকার

  
টেক্কা বিষয়ক জটিলতা


যাঁরা নিয়মিত তাস খেলেন বা তাসখেলার মারপ্যাঁচ দেখে আসছেন
তাঁরা লক্ষ করেছেন ব্রিজ রামি ব্রে তিন তাস
বিন্তি ফিশ টোয়েন্টিনাইন তাসের অনেক ভূবন
কখনো টেক্কা বিশ্বজয়ী তুরুপের তাস
কখনো গোলামের চেয়ে খাটো আবার দহলার চেয়ে মানমর্জিতে বেশি
কখনো হরতনের টেক্কা চিড়িতনের টেক্কার চেয়ে কেউকেটা
কখনো কাগাবগা চুনোপুঁটি
যত খেলা বদল হয় পালটায় টেক্কার কদর আর তার প্রাণপ্রাচুর্য
যে কোনো রাউন্ড খেলার শেষে শুরু হয়ে যেতে পারে
রুইতনের টেক্কা নিয়ে ভয়ংকর বিতর্ক
একটা অবস্হানকে বলা যেতে পারে ইসকাপনের টেক্কা ফেলার যথাসময়
একটা খোপকে সনাক্ত করা যায় হরতনের টেক্কা পাশ করে যাওয়ার অবসর
মনে হতে পারে পিট পাওয়া নিয়ে শুরু হয়ে গেছে
হাইজেনবার্গ আর শ্রোয়েডিংগারের মধ্যে জগৎ বিচারের মৌল মতান্তর
আমরা জেনে গেছি দুরকমের উঠকিস্তি প্রত্যেক রাউন্ডে অসংখ্য সম্ভাবনা
কখনো মানুষ উঠবে সিঁড়ি থেকে যাবে স্হির
কখনো সিঁড়ি ক্রমাগত উঠে যাবে মানুষ নড়বে না
তবে ক্রমশ এভাবে নিশ্চিত হওয়া যায় চারটে টেক্কার
কোনো সুনিশ্চিত হাতযশ নেই
আর তাসখেলা কোনো সরলতা পরখ করার আয়োজন নয়
কেননা শেষাবধি সংশয় থেকে যেতে পারে
চিড়িতনের পাঁচ পিটের পর হরতনের টেক্কা বের করা ঠিক ছিল কিনা


প্রকৃতি  

বলতর পারেন স্যার আজকাল কার প্রকৃতি মারহাব্বা যাচ্ছে
মকবুল ফিদা হুসেন নাকি বিকাশ ভট্টাচার্য
রেফারেন্সের জন্যে ওল্টাতে পারেন সেন্ট পারসেন্ট নেচার ওরিয়েন্টেড জীবনানন্দের রূপসী বাংলা
এ-ব্যাপারে যুৎসই টিপস নিয়ে আসতে পারেন মনসিজ মজুমদারের কাছ থেকে
শিববাবুর সেজো বা মেজো, যে মেয়েটির নাম ছিল প্রকৃতি সে তো বায়োটেকনোলজি শেষ করে
বেশ ডাঁসালো এন আর আই বিয়ে করে চলে গেছে ক্যালিফোর্নিয়া না উরুগুয়ে
বছরে বছরে ছেলেপুলে নিয়ে এসে বড়ো হওয়া দেখিয়ে যাবে সল্টলেকের মা আর ছুটকি পিসিকে
এবার ভেবে দেখা যাবে হেলেন কার্টিসের নিমকের কাছে যাব
নাকি ডাবরের মার্গোহয়ে রাখা থাকবে মাসকাবারির ফর্দে
দিনক্ষণ তিথির পাশে একাদশি আর পূর্ণিমা কবে কবে যেন বাতের ব্যথা বাড়ে
ড্রইংরুমের ক্যালেন্ডারে শক্তি চাটুজ্জের কবিতার প্রেরণা হয়ে ঝুলে থাকো
ভাটপাড়ার নিতাই আর নিখিলেশ দু'চার দিনে হয়তো টোটকা ব্যাংক খুলবে
খনার বচনের সঙ্গে পাঞ্চ করে প্রোপোজাল ছাড়বে ই-কমার্সে
শুধু ঘরে বাইরে দু-একটা শাঁসালো মাল্টিন্যাশানাল স্পনসর চাই
এসো, মামণি খুকুসোনা শিশি বোতলের মধ্যে হার্বাল হয়ে ঢুকে পড়ো
শোনা যাচ্ছে পোস্টমডার্ন ব্যাপারটা নাকি রাইজোম্যাটিক ঘাসেদের মতো
ছাড়াছাড়ির চেয়ে জড়াজড়ি জাপটাজাপটি হাম্পিমাম্পি আরাফত মার্কা
চিরকাল হন্যে হয়ে সাদাসাপটা সরজমিন স্বদেশ নিভুঁই খুঁজে যাওয়া… 


প্রাসঙ্গিক


চুম্বকের ঠিক মাঝখান থেকে ঘুমন্ত জলাশয় ভেসে ওঠে
ক্রমশ ফুরিয়ে-আসা জন্মদিনের মোমবাতি দ্রুত নিভিয়ে দেয়
বিষুবরেখার কাছাকাছি দুপুর হলে বর্ষা নামে
একটা ছটফটে ঢেউ মুঠোয় তুলে দেখে নেয়
চুম্বকের ঠিক মাঝখানে আছে আকর্ষণ আর প্রত্যাখ্যান
এক-এক সময় তারা শুধু পোশাক বদল করে
একজন যখন রাতের পোশাকে সাজে অন্যদিক তখন স্বপ্নভাঙার ঘোরে
ঘুমন্ত জলাশয়ের গল্প শোনায় কেননা দিকচিহ্ণ যার নাগালপ্রিয়
তার কোনও মধ্যবিন্দু আছে কি না আর যদিও বা থাকে
সেখানে সেই আকর্ষণ ও প্রত্যাখ্যান কীভাবে পাশ ফেরে
কেননা শেষ ট্রেনের প্রসঙ্গ এলে পাশাপাশি একটা তারিখের কথা ওঠে



নিত্যযাত্রী  

যেভাবে একফালি মেঘের জলদেশে কিছুকাল থেকে আসে
ঝর্ণার আপেলবাগান পেরিয়ে যাওয়া,
গা বাঁচানি যানজট বা সাজানো পথ অবরোধের সঙ্গে পেরোতে চাওয়া
সময়ের সম্পর্কের কথা আমরা জানি;
কেননা শেষাবধি ঈশ্বরও তো দু'রকমের , হয় সে মানুষের মতো দেখতে নয়তো কোনো কিছুরই মতো দেখতে নয়, অর্থাৎ যাকে বলা হয় নিরাকার-
সাবঅ্যাটমিক লেভেলে বাড়তে থাকে ফাঁক দিয়ে গলে যাওয়ার মনোভাব
'টা পঁচিশের যানজটে আটকে যায় রিংকুদের স্কুল যাওয়ার সময়
মিস্টার সান্যালের অফিসটাইম ভবতোষবাবুর কার্যক্রম
পিছিয়ে যায় পথের ধারের গাছটিতে ফুল আসার সময়
আর বেশ কিছু সময়মনস্ক কীটপতঙ্গের বিলিব্যবস্হা,
যেভাবে ফল ঠোকরানো পাখিদের তোড়জোড়
স্হিরভুলুনি প্রজাপতিদের উড়ে যাওয়ার দিকে লক্ষ্য রাখে
গণিতেও একই সঙ্গে কথা ওঠে সসীম অসীম আর অপরিমেয়ের সূক্ষ্মের
গাড়িঘোড়া শব্দটি থেকে ঘোড়া বেরিয়ে চলে যায় নিখিলের আস্তাবলে
তবু জানা হয়ে ওঠে না অনিত্যযাত্রী নারদের বাহন কেন ঢেঁকি শীতলার গাধা
যান চলাচল ইশারাময় করে তোলে ট্র্যাফিক সংকেত পেছনে খালাসি
পথঅবরোধের সঙ্গে দূরদর্শীরা মিলিয়ে দেন পারানির কড়ি
মর্ত্যধামে মার খাচ্ছে সুধীরের অটোরিক্সার খেপ তার কামাবার সময়
তবু সম্পর্কের জটিলতার ঈষৎ হদিস দিতে
পেছনে লেখা আছে বৌদির আশীর্বাদ'



ক্ষেত্রজ


সারা ভারত জুড়ে এত কলাবতী কেন
পড়েছি, কলাবতী বায়ু প্রসব করলে অযোনিসম্ভূতা
রাধিকার জন্ম
দেখেছি,শুঁয়োপোকা আরোহে প্রজাপতি
উচ্চগ্রামে স্বরলিপি স্বর পাল্টায়, প্রত্যেক শব্দ
উচ্চারিত হলে কিছু বায়ু তার পেটে থেকে যায়
তবে কি মানুষের জীবনটাই শব্দের গতিবিধি
বায়ুতরঙ্গের চলাফেরা
কে জানে আবার নিম্নচাপ কবে
কলাবতী জানে
আছেন এক কলাবতী সত্যনারায়ণে

   
হণির ভিতর দিয়ে দেখা যায়
  
জাহান্নামে যাক গ্রহ নক্ষত্রসমুহ ভেঙে পৃথিবীও যাক জাহান্নামে,
লাথি মেরে সব ভেঙে চুরমার করে দিলে কাল আমি সহাস্যবদনে
হাততালি দিয়ে মঞ্চে কোনরূপ গ্লানিহীন নুরেমবার্গের আদালতে
তুড়ি মেরে কাঠগড়া গুঁড়িয়ে তোমাদেরও পারতাম ভেল্কিসুবিস্তারে|
সৌরমণ্ডলের পথে তছনছ পৃথিবীর অন্ধকার ফেরী আবর্তন
কোনোরূপ রেখাপাত সম্ভব ছিলোনা গ্রন্থে হৃদয়ে মেধায়,
আমার শরীর ঘিরে ইহুদির হিন্দুশিখমুসলিমের
আততায়ী আদর্শের ঘৃণ্য রক্তপাত--
আমাকেও জয়োল্লাস দিয়েছিল মুত্রপাতে পোষা রাজনীতি|
তোমাদের আস্ফালনে বিনয়ী মুখোশ ঘিরে আমার হণির জন্মদিন
আমারই মুখোশ ধরে টান মেরে ছিঁড়ে ফেলে আর্ত চিত্কারে--
ধান উত্পন্ন হওয়ার গন্ধ এখন পেয়েছি শুঁকে কৃষকের উর্বর শরীরে,
কুমারী মহিলাদের মসৃণ উজ্জ্বল দেহে বহুবার হাত রেখে উত্তর নিরিখে
পরাগ চমকে ওঠে, স্পর্ষ করে নারীর সমগ্র দেহ জুড়ে
আশ্রয়ে ছড়ানো আছে পীত এক ধরনের মিহিরুখু বালি|
ক্রমে এই সমস্তই নাভির ভিতরে আনে রুদ্ধ আলোড়ন,
জেগে ওঠে মৃগনাভি, চেয়ার টেবিলে গ্রন্থে অম্লান মাঠের ভিতরে
ধূ ধূ রিক্ত প্রান্তরের দিকে শাবক প্রসব করে রঙিন প্রপাত,
চারিদিকে ফলপ্রসূ হয়ে গেছে রাশি রাশি প্রতিহারী ধান--

মনে হয় বহুক্ষণ মাঠে মাঠে গড়াগড়ি দিয়ে বিছানায় উঠে আসে নারী
ক্ষুধার্ত শিকড়গুলি ঢুকে যায় নীড় আস্বাদনে;
তখনই উত্পন্ন হওয়ার গন্ধ জাগে, কৃষকের উর্বর শরীরে|
প্লুত আবছা আঁধারে আজ তাই বারংবার মনে হয় পৃথিবীর সহজ সুদিন
ফিরে এলে সুধাশান্তি,

আমার হণির জন্য তোমাদের কাছে আমি ঋণী চিরদিন|



চিড়িয়াঘর


কবিতার পাখি
তুমি কোনোকালেই জীববিজ্ঞানের পাখি নও
শ্বেনপক্ষী শুকপাখি গড়ুরের বংশজ তুমি
অ্যাখ্যানমর্মরে ঝরে তোমারই পালক
তুমিই তো বারবার বাকসিদ্ধ হয়েছ ছাপ্পান্ন ভোগে
একান্নবর্তী পরিবারের নিসর্গভরসা
পরিযায়ী তুমি যে দিকে যাও তোমারই অপেক্ষায়
বিষধর একমাত্র হাওয়ামোরগ
আজো শব্দ ঠুকরে খেয়ে বেঁচেবর্তে আছো 


আনুভূমিক

আমার মা আজকাল দিনদিন ছোটো হয়ে যাচ্ছে
একই স্পেসে আলাদা সময়ে
দুই তাসুড়ে
নবগাঁর জয়ন্তর চাঁদ আর উরুগুয়ের ফেদেরিকোর সূর্য
অনলাইনে তাস খেলছে
পিঠ কুড়োচ্ছে
যশোদার কোলে ভূমিষ্ঠ আনুভূমিক
বাড়ছে দেশকালের স্পর্ধা
ব্রিজ খেলছে
অঅসেতুসম্ভব সেতুবন্ধন

গোলাকার ভূমন্ডলে ঘটমান পৃধিবী ত্রিকোণ

কবিতার নদীর প্রেমিক কোলাহল
নির্জনতা কোলা হলের প্রেমিকা
ত্রিকোণ প্রেমের ফাঁদে
আজও নদী আঁকাবাঁকা 


অধুনান্তিক


যারা আস্ত রসগোল্লা একবারে মুখে পুরে দেয়
আর যারা ছোটো করে ভেঙে থেমে থেমে খায় অথবা
চারটে নিলে এক-আধখানা এঁটো প্লেটে ফেলে রাখে
সেইসব আচরণের সামাজিক অবস্হান নিয়ে ভাবতেন রোলাঁ বার্থ
তিনি বঙ্গসংস্কৃতির রসগোল্লার সঙ্গে পর্তুগিজ অভিযাত্রীদের
মিষ্টান্নপ্রীতির খুঁটিনাটি সূত্রগুলি জানেন, যেভাবে রসগোল্লার সঙ্গে
ইউরিয়া বা চিনি-কেলেঙ্কারির হদিশ রাখেন স্বাধীনোত্তর সাংবাদিক লবি
অথবা বাতাসার সঙ্গে ঈশ্বরের আরাধনার যোগসূত্র জানতেন পতঞ্জলি
রসগোল্লার সঙ্গে কমলাভোগের বা রসমুন্ডির পার্থক্যকে
হালুইকর ও মোদক সম্প্রদায়ের জাতিগত ইতিহাসের দিক থেকে
দেখা হবে কিনা সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিতর্কে অনায়াসে
নিয়ে যাওয়া যেতে পারে পিছড়াবর্গ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে
বস্তুবাদী দ্বান্দ্বিকতার সম্পর্কসূত্র একসময় জানতেন মাননীয় সুভাষ চক্রবর্তী
অবশ্য ভবাপাগলা বলে গেছেন রসগোল্লার সঙ্গে আমেজে
গোল্লায় যাওয়ার সম্পর্ক নিছক রসবোধের যার জ্যামিতিক
সাদৃশ্য-বর্ণনা পাওয়া যাবে গোল-গল্পে বা গোল-কবিতায় তবে
লেডিকেনির বদলে যাঁরা রসগোল্লা ভালোবাসেন
হলফ করে বলা যায় তাঁরা কোনোমতেই আর যাই হোন বর্ণবিদ্বেষী নন
কেননা আগ্রহের বা উদগ্রীবের যাবতীয় কূটরহস্য রাখা আছে
লোকায়ত অন্ধকারে উৎবিড়ালরা অহোরহ যেখানে অতর্কিতে হানা দেয়








My Blogger Tricks

1 comment:

  1. খুব ভালো লাগলো... উনার সম্নধে অনেক জানা গ্যালো... কবিতা গুলিও অসামান্য

    ReplyDelete