Wednesday, July 6, 2016
একটি নতমুখী ছায়া
যদিও নামের ভিতর থেকে অর্থ নিংড়ে কোন ব্যক্তি মানুষের মুখে
ঢেলে একটু ঘেঁটে দিলে মানুষটির প্রতি কতটা সুবিচার করা হয় তা নিয়ে আমার সংশয়
প্রবল তবে এটা বলতেই পারি যে, সজলদার
ভিতরকার অগ্নিময় চেহারা বাইরের নরমে এসে এমনভাবে হাত বাড়ায়, যেখানে ভালবাসার হরফ, ঘৃণার দাড়ি,খ্যাতির উধৃতি-চিহ্ন
আর অপমানের অর্ধ-ছেদ সজলদার অক্ষর বর্ণের সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে
যায়। একটি অসামান্য পান্ডুলিপি হয়ে ওঠেন
সজল বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং । এমনই কবি সজল।
একটি আন্দোলনের শরিক হয়েও বারবার নিজেই
নিজের কাছে অচেনা হয়ে পাঠককে উপহার দেন এক
অনন্য সজল।
প্রশ্ন কুরে কুরে
খায় প্রতি পলে, প্রতি পঙক্তিতে, প্রতি স্তবকে।সজলদার লেখা কবিতা পাঠ করলে এক
অক্সিজেন আত্মীকরণ ঘটে । শুধু তাই নয়,জিজ্ঞাসাগুলো যেন পাঠকের একান্তের হয়ে ওঠে।
একেবারেই উচ্চকিত নয় সজলদার কবিতা।কবিকণ্ঠ মাখনের ছুরি চালাতে জানে। অথচ
কবিতার মগ্নতার তীক্ষ্ণতা আমাকে আরো নিমগ্ন
করে ওঁর লেখায়। যিনি নিজেকে এভাবে দেখতে পারেন, “ একযুগ আয়নার সামনে একটা পাথর”
আমি বিস্ময় প্রকাশ
করি নিজের কাছে ,পাঠকালীন আমার কাছে। ওঁর কবিতা লেখার ধরন সবার মত নয়। কবিতা তো
নিজের সঙ্গে বৈচিত্রময় নিজের কথা বলা।
সজলের কনফেশনের ধরন ,সময়কে পদাঘাত করে কবিতাকে সময় এর উর্দ্ধে নিয়ে যাওয়ার ভাষা সজলদাকে সকলের থেকে আলাদা
করেছে।
ছায়ার পাশে আরেকটা ছায়া
আমরা তিনজনে
একে অন্যকে ছুঁয়ে
হাঁটতে লাগলুম
কেউ কোন কথা বলছেনা
কেউ কোন শব্দ করছেনা
এবং রাত বাড়ছে
সকাল হতেই
কোথায় কার ছায়া
কেউ কোথাও নেই
শুধু একা একটা কষ্ট
কবিতাটি পড়ার পর আর কিছুই বলার থাকেনা। সব ই তো বলা হয়ে গেল!! নাকি
যদি বলি ,কবিশুধু বলার ভাণ করলেন। বললেননা কিছুই।কুন্ডলী পাকানো ধোঁয়ার মরীচিকায়
ছেড়ে দিলেন চোখ বন্ধ করে। আর পাঠক ছায়া হাতড়াতে হাতড়াতে ব্রেইল হাতড়াতে
হাতড়াতে স্পর্শ এর তাড়নায় নতমুখী ছায়া ফেলছে নিজের ভিতর। এখানেই ভিন্নমুখ কবি সজল বন্দ্যোপাধায় । ওঁর লেখাকে জানাই
স্তব্ধতার ভালোবাসা।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment