Wednesday, July 6, 2016
এই ক্রোড়পত্রে যারা লিখেছেন
অর্পিতা বাগচী প্রবীর রায় রঙ্গন
রায় শুভঙ্কর দাশ নীলাব্জ চক্রবর্তী অনিন্দ্য রায় অনিন্দিতা গুপ্ত রায় শমীক
ষণ্ণিগ্রাহী সত্যপ্রিয় মুখোপাধ্যায় কৌশিক চক্রবর্তী উমাপদ
কর আনন্দ ঘোষ হাজরা পুষ্কর
দাশগুপ্ত রিমি দে দেবাশিস মুখোপাধ্যায় রমিত দে প্রশান্ত গুহ মজুমদার প্রবাল
কুমার বসু প্রাণজি বসাক অনিক রুদ্র
“বড় ইজেলে বড় ছবি, ছোট ইজেলে ছোট। তেমনি কবির পক্ষে যখন মহাকাব্য লেখা সম্ভব
হয় না, দীর্ঘ গাথাকাব্য লেখা সম্ভব হয় না অথচ ভিতরের অনুভব প্রকাশের অপেক্ষায় থাকে
তখন আকারে ছোট কবিতাই দরকার হয়ে পড়ে। অনেক সময় কবি ছবি সাজিয়ে বলতে চান। একের পর
এক ছবি লিখতে গেলে পুনরাবৃত্তি আসে, অ-বিচিত্র হয়ে পড়ে। তখন ছোট অমোঘ অস্ত্র হয়ে
ওঠে”
এই কাব্যদর্শন, এই ভাবনা নিয়েই কবিতা সজল
বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
গত শতকের ছয়ের দশকে শুরু করে মোটামুটি অর্ধ শতাব্দী তাঁর লেখালেখি।তো,সেই
সময়ের বাঙালি সমাজ ও বাংলাভাষা , ছোট হয়ে আস্তে থাকা পৃথিবী , স্বপ্ন ও
স্বপ্নভঙ্গের শব্দ , আশা হতাশার টানাপোড়েন আমাদের মনে পড়ে, আমরা মনে করতে বাধ্য হই
তাঁর কবিতা পড়তে বসে।স্বাধীনতা ও তার স্বপ্নভঙ্গ, দেশভাগ ও তার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া
বাঙালি সমাজের ভিত নাড়িয়ে দেয়। এতদিনকার
সামাজিক ও পারিবারিক স্ট্রাকচার ধ্বসে পড়ে, অর্থহীন হয়ে যায় চিরাচরিত মূল্যবোধ।আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে
দুই মহাশক্তির ঠাণ্ডা লড়াই, ভোগবাদ ও
অন্তঃসারশূন্যতা চরমে পৌঁছায়। ফুটে ওঠে ব্যক্তির একাকীত্ব, এলিনিয়েশন , চাওয়া
পাওয়া না-পাওয়ার নতুন গ্রাফ
‘ আমার মা
সারাদিন মালা জপেন
আর আমি
আমার
বোন সারাদিন উল বোনে
আর আমি
আমার
বউ সারাদিন আলনায় জামাকাপড় সাজায়
আর আমি
আমার
প্রতিবেশীরা সারাদিন বাড়ি তোলে
আর আমি
আমার
বন্ধুরা সারাদিন লিফটে চড়ে
আর আমি
আমি
সারাদিন শুধু আমি শুধু আমি’
( আমি সারাদিন
আমি )
এই সময়ে লিখতে হলে, এই সময়কে লিখতে হলে প্রয়োজন হয়ে পড়ে
পুরনো কাব্যতত্ত্বকে, ছন্দ অলংকারের প্রাচীন ও গতানুগতিক বাউন্ডারিকে অতিক্রম
করার, প্রয়োজন হয় নতুন, সময়োপযোগী এক কাঠামোর। কংক্রিট পোয়ট্রি , মিনিমালিস্ট পোয়েট্রি ও ভিস্যুয়াল পোয়েট্রির ধারাগুলি
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে গড়ে উঠতে থাকে।
বিছিন্ন ব্যক্তিমানুষ জোট বাঁধতে শুরু করে ।বাংলা সাহিত্যেও
বিভিন্ন আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। ‘শ্রুতি’ এই পত্রিকাটিকে ঘিরে একটি বিশেষ কাব্যরীতি
প্রতিষ্ঠা পায়।
সজল বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর কবিতাকে আমরা দেখব এই ‘শ্রুতি’ আন্দোলনের অন্যতম শরিক
হিসেবে।
বক্তব্যের বদলে ছবি, বিস্তারের বদলে পরিমিতি, কোলাজ ও
মন্তাজের ব্যবহারে শব্দগুলির পারস্পরিক অবস্থানের মিথষ্ক্রিয়ায় তৈরি হওয়া ব্যঞ্জনা
তাঁর কবিতাকে বিশিষ্টতা দিয়েছে। এবং আত্ম-অন্বেষণ এবং চারপাশ এবং মহানগর এবং
বিদ্রুপ এবং ব্যবসায়িক সাহিত্য বিপণি থেকে
সরে যাওয়া এবং সঙ্গীত এবং ছবি এবং কবিতা
‘ভেতরে
ক’জন
অন্ধ
হাত
বুলিয়ে বুলিয়ে
ছবিটা
দেখছে।’
(আমি)
অন্ধের মতোই আমরা,
তাঁর পাঠকেরা স্পর্শ দিয়ে অনুভব করি তাঁর কবিতাকে। ছোট কবিতায়, ‘ভ্রমন’
কাব্যগ্রন্থের গদ্যে লিখিত কবিতায়, ‘মিড়’-এর সংক্ষিপ্ত অ রিপিটেট উচ্চারণে অথবা
অক্ষরবিন্যাসের অভিনবত্বে একাধিক নতুন রীতি তিনি দিয়ে গেলেন আমাদের। তাঁর এই
আঙ্গিক ও দর্শন পরবর্তী কবিদের রচনায় আমরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ছড়িয়ে পড়তে দেখলাম।
কবি সজল বন্দ্যোপাধ্যায়ের
প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আর ভালবাসা
জন্ম
২৫শে বৈশাখ ১৩৪৮ শ্যামবাজার
স্ত্রী
অর্পিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
মেয়ে
সন্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বাবা
সন্তোষ বন্দ্যোপাধ্যায়
মা
জ্যোৎস্না বন্দ্যোপাধ্যায়
পড়াশুনো-তেলেনীপাড়া ভদ্রেশ্বর হাইস্কুল,চন্দননগর কলেজ,কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
কর্মজীবন- সেন্ট পীটার্স হাইস্কুল,সেন্ট জেভিয়ার্স
কলেজিয়েট স্কুল,সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ
পুরস্কার – কৌস্তভ breez
in the making মহাদিগন্ত
সম্পাদনা- শ্রুতি, নতুন
কবিতা,মহাদিগন্ত,কালক্রম
প্রিয় কবি – অক্তাভিও পাজ,জ্যাক প্রেভের,
উঙ্গারেত্তি,নিকোলাস গিলেন প্রমুখ
সমসাময়িক- জীবনানন্দ দাশ, অরুণ মিত্র, শরৎ
মুখোপাধ্যায়,আলোক সরকার,পরেশ মন্ডল, মানিক চক্রবর্তী,অশোক চট্টোপাধ্যায়,কেদার
ভাদুড়ী
প্রিয় কবি ও বন্ধু – উত্তম দাশ, আনন্দ ঘোষ
হাজরা,অতীন্দ্রিয় পাঠক,খগেশ দেববর্মণ,
প্রিয় গায়ক - আব্দুল করিম খাঁ,ভীমসেন
যোশী,মল্লিকার্জুন মনসুর
প্রিয় শিল্পী- রবীন মন্ডল, যোগেন চৌধুরী
প্রিয় শখ – পুরোনো রেকর্ড আর পাইপ সংগ্রহ
প্রিয় নেশা – মদ্যপান আর তামাক সেবন
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment