Wednesday, July 6, 2016
কেন মীরাবাঈ
‘অন্য ভাষার কবিতা’ বিভাগে গত ৩ বছরে এখনও অবধি যতজন কবিকে নিয়ে কাজ হয়েছে
তাঁরা প্রত্যেকে সমসাময়িক। তাঁরা গত শতকের নব্বুই দশক অথবা একুশ শতকের প্রথমভাগে
লিখতে আসা কবি। অর্থাৎ তাঁদের লিখন-কাল আমাদের এই চোখে-দেখা ছুঁয়ে-পাওয়া পৃথিবীর
কাল। অ্যাকাডেমিক ভাবে, তাত্ত্বিকভাবে আমরা কবিতার ও কবিদের কাল সূচিত করি।
নির্দিষ্ট করি। কবিতার ভাষা, অন্তর্বতী জগৎ ও তার ব্যাখ্যাদান এবং তার
চিহ্ন-সঙ্কেত-উপাদান এসবের মাধ্যমেই নির্ণীত হয় সেই কাল। আরও কিছু থাকে বৈকি যা
কাল নির্ধারক, নির্ণায়ক। কিন্তু এসব তো ছাপা বইয়ের লেখার কথা। কবির তাতে কী? সাতশো
বছর আগে যখন কবীর লিখে ফেলেন, ‘রাম হমারা হমে জপেরে হম পায়ো বিশ্রাম কবীরা’, তখন
‘রাম’-এর সাথে ‘বিশ্রাম’-এর ধ্বনি-অভিঘাত আমার কাছে একালেও লক্ষ্যণীয় হয়ে ওঠে।
অথবা, দুশো বছর আগে গালিব যখন মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের প্রেক্ষাপটে লেখেন তাঁর
অবিস্মরণীয় লেখা ‘চিরাগ-এ-দেয়ার’ (দেবালয়ের বাতি), তখন তার আধুনিক মনস্কতা আমাকে
আজও মুগ্ধ করে। কিংবা ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ কাব্যে বড়ু চণ্ডীদাস যখন লেখেন, ‘এ ধন
যৌবন বড়ায়ি সবঈ তো অসার—ছিণ্ডিআঁ পেলাইবোঁ গজমুকুতার হার’; যৌবন ছিঁড়ে গজমুক্তার
হারের এই মাথা খারাপ ক’রে দেয়া প্রয়োগ আমায় আজও বিস্মিত করে। প্রকৃত কবির ভেতরে
সমসময়ের চিহ্ন ও আবেদনের সাথে-সাথে আদি হতে অধুনা সব কবিই বসত করেন। কবি তাঁর
এই নিজস্ব মানস ও ঐতিহাসিক চেতনার ঘাতে-সংঘাতে যে-চেতনা লাভ
করেন, সেই প্রজ্ঞায় তিনি বর্তমান ও অতীত, অতীন্দ্রিয় অনুভূতি ও প্রত্যক্ষ জগতের
মধ্যে ঐক্যসূত্র স্থাপন করেন। অল সং রাইটার্স আর কানেক্টেড ইন আ লং চেইন, পীট
সীগারের সেই কথাটা, বন্ধনহীন গ্রন্থিতে গাঁথা কবি-শিল্পীদের ক্ষেত্রেও খাটে। সেই
জায়গার থেকে চণ্ডীদাস, কবীর, গালিব, তুকারাম, মীরাবাঈ প্রত্যেকের নির্মাণ
কবিতাপ্রবাহের আবহমানে এককাল থেকে আরেক কালস্রোতে ভেসে যাওয়া সাগরিক লবণ ও ফসফরাস।
সেই জায়গার থেকে এঁরা প্রত্যেকে আমার সময়ের কবি অথবা আমি তাঁদের সময়ের। কিংবা,
এখানে সময়ের ‘আমরা, ‘ওরা’ ব’লে কিছু নেই। আমরা প্রত্যেকেই একইসাথে একটা থালা থেকে
রুটি ছিঁড়ে খাচ্ছি।
তবে, আরও কিছু ব্যাপার এখানে আছে। রবীন্দ্রনাথ রানী চন্দকে কথা-প্রসঙ্গে
বলেছিলেন, কবিতার বেশিরভাগটাই যেহেতু ইনসাব্স্ট্যান্শিয়াল, ফলে ভাষার পরিবর্তনের
সাথে তার রস অনেকটাই হারিয়ে যায়। যেহেতু তার অনির্বচনীয়তা ফুটে ওঠে ভাষার ব্যঞ্জনা
দিয়ে, সময়ের সাথে সে-ভাষার বদল হলে তার রসের সৌন্দর্য ভাবীকালের পাঠকের কাছে
সেভাবে আর ধরা পড়ে না।
আমার নিজের মনে হয়, এইখানেই পুরাতনী সাহিত্য-অনুবাদের যথার্থতা। এবং প্রয়োজনীতা।
ভাষার ব্যঞ্জনায় যে-রসের সৃষ্টি হয়েছে, সে-ভাষা আজ উজ্জ্বল না থাকতে পারে, ভাষার
পরিবর্তনের সাথে তার গৌরব, তার স্বাদ কমে আসতে পারে; কিন্তু সার্থক অনুবাদই তাকে
একালের পাঠযোগ্য ক’রে তোলে। এবং নতুন ক’রে তাকে আবিষ্কার ও পুনরুদ্ধারও করে।
ঐতিহাসিক পুনরুদ্ধার, চেতনার ইতিহাস সন্ধান এবং সেকালের সাথে একালের আবহমান
রেখাটিকে স্পষ্ট করা—একইসাথে এই তিনটি রেখাকে একবিন্দুতে নিয়ে আসে এ’ কাজ।
অর্জুন বন্দ্যোপাধ্যায় (বাক্ পত্রিকা, অন্য ভাষার
কবিতা, বিভাগীয় সম্পাদক)
মীরার ঝংকার
রিমি দে
কৃষ্ণপ্রেমে যে
দুজন নারী পাগলিনী হয়েছিলেন, তাঁরা হলেন রাধা এবং মীরাবাঈ। রাধা অবশ্য কবি জয়দেবের
সৃষ্টি। রাধা কবি কল্পনাপ্রসূত হলেও মিথপুরানে ওঁর উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু মীরাবাঈ
এক ঐতিহাসিক নারীচরিত্র। রাজস্থানের এক প্রভাবশালী গোত্রে মীরার জন্ম। মেরতার কাছাকাছি কুদকি (কুরকি) নামে এক গঞ্জে ১৪৯৮ খৃষ্টাব্দে
মীরাবাঈ জন্মগ্রহন করেন। ওঁর পিতা ছিলেন যোধপুর শহরের প্রতিষ্ঠাতা মান্দোরের রাও
যোধার (১৪১৬-১৪৮৯) পুত্র রাঠোর বংশীয় যোদ্ধা রতন সিংহ রাঠোর। এক কথায় মীরা ছিলেন
রাজপুত রাজকুমারী।
শিশুকালেই
কৃষ্ণমুর্তির প্রতি আকৃষ্ট হন মীরা। এবং সে সময়েই তাঁকে যে মূর্তি দিয়েছিলেন এক সন্ন্যাসী, সেটা মীরার কাছেই থেকে যায়
সারাজীবন। মীরার এই অত্যধিক ধার্মিক স্বভাবের প্রতি ওর মায়ের সমর্থন ছিল সম্পূরণ।
কিন্তু মায়ের অকাল মৃত্যু মীরাকে অসহায় করে তুলল।
চিতোরের রানা সংগার
জ্যেষ্ঠ্য পুত্র ভোজরাজের সাথে মীরার শৈশবেই বিয়ে হয়। নব বালিকাবধূ মীরা বিয়ের পরদিনই
শ্বশুরবাড়িতে জানিয়ে দেয় যে সে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে জন্ম থেকেই আবদ্ধ।
মনে হয় যোধা পরিবারের সাহসী রাজকন্যা বলেই একথা বলা সম্ভব হয়েছিল। শ্বশুরবাড়িতে
প্রশ্ন ওঠে মীরার ঈশ্বরভক্তি নিয়ে।শ্বশুরবাড়ির পরিবার ছিল কালীভক্ত। খুব
স্বাভাবিকভাবেই মীরাকে প্রচুর বিরোধিতার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন পর্ব চালাতে হয়েছে। মীরার স্বামী
ভোজরাজ তৎকালীন এক ইসলাম শাসনের বিরুদ্ধে
যুদ্ধে নিহত হন ১৫২৭ খৃষ্টাব্দে। মীরা তখন অষ্টাদশ
পেরোন যুবতী। মায়ের মৃত্যুর পর এই ঘটনা ওঁর জীবনে আরো একটি শোক। মীরা উপলব্ধি
করলেন পার্থিব প্রেম ভালবাসা ক্ষণস্থায়ী। আরো গভীরভাবে নিমজ্জিত হলেন কৃষ্ণ
আরাধনায়। কৃষ্ণ প্রেমের মত্ততা তাঁকে সামাজিক ভাবেও পদে পদে বিব্রত করেছে।
পাশাপাশি কৃষ্ণ একাত্মতা মীরাকে বাচিয়ে রেখেছে। স্বামী ভোজ রাজের মৃত্যুর পর দেবর
বিক্রমাদিত্য হয়েছিলেন চিতোরগড়ের রানা। উনি দুষ্ট প্রকৃতির লোক ছিলেন। ননদ উদাবাঈ
এবং শাশুড়ির প্ররোচনায় মীরাকে হেনস্থা করেছে বহুবার। এমন কি বিষ দিয়ে হত্যা করারও চেষ্টা
করা হয়েছে। কিন্ত আপাত দৃষ্টিতে অবিশ্বাস্য মনে
হলেও সর্বজনবিদিত কথা বলাই যায় যে, বারবার
মীরা বিপদ থেকে উদ্ধার লাভ করেছেন দৈববলে!! ঠিক যেমন আমরা রামপ্রসাদ, রামকৃষ্ণ
প্রমুখের জীবনে অলৌকিক প্রভাবের প্রচুর গল্প
শুনি। সত্যতা তো যার জীবন, তিনি ছাড়া কেউ জানবেন না।
মীরার কৃষ্ণ সাধনা
অব্যাহত থাকে। যবে থেকে মীরা কৃষ্ণনাম জপে আসছেন, তখন থেকেই কিন্তু কৃষ্ণভজন লিখছেন।
ভক্তর ভক্তিরস বয়সের সাথে সাথেই পরিণত হয়। মীরার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
তার রচিত প্রায় পাঁচহাজার ভজনের মধ্যে বারোশো থেকে তেরশো ভজন বিখ্যাত হয়েছে। তিনি বিশ্বাস করতেন সারা বিশ্বব্রহ্মান্ডের একমাত্র
প্রভু শ্রীকৃষ্ণ। বৈষ্ণব ভক্তিরসে নিজেকে সম্পুরণ নিমজ্জিত রেখে সাধারণ দরিদ্র
মানুষের পাশে থাকার ব্রত গ্রহণ করলেন। পারিবারিক শ্ত্রুতা তাও মীরার পিছু ছাড়েনি।
ততদিনে মীরার ভজনও কৃষ্ণভক্ত দের মুখে শোনা যেত।মীরা তারপর রবিদাসের নাম গুরু
হিসেবে ঘোষনা করলেন। এবং বৃন্দাবনে কৃষ্ণনাম করতে চলে যান। মীরা নিজেকে
পূর্বজন্মের কৃষ্ণপ্রেমে পাগল গোপী লোলিতা মনে করতেন।উত্তরভারতের বিভিন্ন জেলায় ও গ্রামে
গ্রামে নেচে গেয়ে কৃষ্ণনাম জপতেন। মীরার
সমস্ত ভজনেই কৃষ্ণের প্রতি মিলনের আর্তি প্রকাশিত।বৈষ্ণব ভক্তি আন্দোলনের
সন্তধারার এক অন্যতম ব্যক্তিত্ব হিসেবে দিনকেদিন প্রচারিত হতে লাগলেন।ভক্তিবাদী
ধারায় রচিত মীরার ভজন সারা ভারতে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে লাগল ।তবে মীরাবাঈ কে নিয়ে
তথ্যগুলি কিন্তু বিতর্কের ঊর্ধে নয়। যেমন ওর গুরু হিসেবে রূপ গোস্বামীর নামও পাওয়া
যায়।একথা বলাই যায় যে মীরা ছিলেন অভিজাত বংশীয় এক অতীন্দ্রিয়বাদী সঙ্গীতশিল্পী শুধু নয়, পাশাপাশি কথাকার ও সুরকার। সবচেয়ে বড়
পরিচয়, মীরা ছিলেন সহজিয়া (অসাম্প্রদায়িক)
কৃষ্ণ-ভক্ত। ভক্তিভাবের ঘোরেই মীরা কৃষ্ণের সঙ্গে একাত্ম অনুভব করতেন। গিরিধারী
মিলনেচ্ছাই অর্থাৎ লৌকিক যাপনের মধ্যে
দিয়ে এক অলৌকিক আকাঙ্ক্ষার তীব্রতাই মীরাকে বিখ্যাত করেছে। স্বর্গীয় অনুভূতি প্রাপ্তির
জন্যই সারা জীবন কৃষ্ণনামেই কাটালেন। এই স্বতস্ফূর্ত আবেগই মীরাকে সৃষ্টিশীল করেছে
রামপ্রসাদেরি মত।
মীরার ভজন নিয়েও
যদি আমরা একটু কাটাছেড়া করি, তাহলেও কিন্তু ওই কৃষ্ণের সাথে মিশে একাকার হয়ে যাবার
কথাই বলা হয়েছে, দেখতে পাই। যেহেতু মীরার যাপন পারথিব, তাই ওর ভজনের বিষাদ,বেদনা,
হাহাকার এর অনুসংগ গুলোও জাগতিক। মীরার মূল লক্ষ্য প্রেম। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই
প্রেমের আর্তি শুধু মানসিক স্তরে আটকে থাকেনি। শরীর কেও ছুয়েছে। খুব এরটিক না হলেও
কৃষ্ণের প্রতি মীরার যৌন তাড়না নানাভাবে
প্রকাশ পেয়েছে মীরার ভজনে। মীরা শান্ত ভক্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন। নির্গুণ
ব্রহ্মত্মের আধ্যাত্মিকতায় মীরার আস্থা থাকলেও
হৃদয়, মন ও মন্দিরে কৃষ্ণকেই ঠাই দিয়েছিলেন। প্রভুর প্রিয়া রূপেই নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন। প্রভুর প্রিয় রং গোধূলিতে মিশে যাবার
বাসনার কথাও মীরা ব্যক্ত করেছেন। মীরার ভজন বৃন্দাবনে ব্রজ বা
হিন্দিভাষায় বেশি গীত হয়। রাজস্থানী ও গুজরাটি ভাষায়ও অনুদিত হয়েছে। মীরার ভজন কে মীরার পদ বা পদাবলীও বলা হয়।
ইংরাজী ভাষায় মীরার পদ্গুলি অনুদিত হয়। এছাড়া হিন্দি ক্লাসিক্যল
ট্র্যাডিশন শিরোনামে মীরার কবিতাগুলি অনুবাদ করা হয়। পরবর্তীকালে মীরার
সংগী হিসেবে কবীরের নাম উঠে আসে। বেনারসে কবীরের সাথে ঘনিষ্ঠতা মীরাকে সামাজিকভাবে
প্রশ্নের মুখে ফেলেছিল। তখন মীরা মনে হয়
ধর্মভাবের প্রভাবে সমস্তরকম
ক্ষুদ্রতার ঊর্ধে চলে গেছেন। তাঁকে আর কিছুই স্পর্শ করতনা।একদম শেষদিকে মীরাকে
সন্নাসীনিরূপে দ্বারকায় দেখা গিয়েছিল।
১৫৪৭-এ উনি দেহ রেখেছেন শোনা যায়। ভক্তিবাদের অন্যতম পথিকৃত ছাড়াও একজন লড়াকু নারী
হিসেবে মীরার প্রতি আমার ব্যক্তিগত শ্রদ্ধাও অপরিসীম।
অংশুমান পালের কাছে
আমি সত্যি কৃতজ্ঞ। নববর্ষের অনুষ্ঠানে উনি আমাকে মীরাবাঈ-এর কবিতার একটি ইংরেজী
অনুবাদ দেন সেটিকে বাংলায় অনুবাদ করার জন্য।
আমি ওটার একটি ভাবানুবাদ করি। আর তার পর থেকেই মীরাকে পড়া শুরু হয়। ধীরে ওর
লেখার প্রতি অনুরাগ জন্মায়। পাশাপাশি অর্জুনের তাগাদা আমার মীরাপ্রেম বাড়িয়ে দেয়
আরো একটু । মীরার লেখার কিছু ভাবানুবাদ পাঠকদের জন্য রইল।
© রিমি দে
১
ভ্রমণে যোগীসঙ্গ করি
সে বলে,
“শোন স্তব্ধতা
শোন শিরা ও প্রবাহ রক্তগান”
মননে যোগীসঙ্গ করি
টের পাই রাত ও শান্তর ভিতর
আমার ভিতর
প্রবেশ করছে গোটা পৃথিবী
২
থাকব আমি তোমার স্নানে করব অনুভব
গভীর জলে তিমি হয়ে নীরব কলরব
তুমি যদি অরণ্যগান বৃক্ষভরা ফল
তখন আমি শাকাহারি ছাগ নির্ভেজাল
তন্ময়তা তোমাতেই আর তুমি ভর্তি প্রাণ
এক আত্মা এক প্রাণে অনুভবী টান
ধ্যানমগ্ন গিরিধারী জপ জপমালা
আমিও গুটিকা তারই বৃহৎ তাতে ঢালা
নতমুখী ভক্ত তুমি ক্ষুদ্র পাথর ছায়া
পর্বতে আনত আমি শুদ্ধ তোমার মায়া
পান করেছ পরমানন্দ পান করেছ দুধ
প্রভুতে নিবিষ্ট আমি ত্যাগ করেছি ক্রোধ
ঘর ছেড়েছে বর ছেড়েছে কৃষ্ণে মাতোয়ারা
কানাঘুষো গলিতে ডাঙায় নপুংসকের
তাড়া
কৃষ্ণে মগ্ন কৃষ্ণে ভগ্ন
কৃষ্ণভরা গান
একতারা আর ভাবের ঘরে মীরার
কলতান
৩
কালো ভস্মও বর্ণহীন দেখি
দেখি মেঘের পাহাড়
বৃষ্টিভাঙা জল আর জল
বৃষ্টিমাখা সবুজের ঢল ও উৎসব
প্রেম ও ঈশ্বর
ঘরের দুয়ার ভাসিয়ে দূর দেশে বিদায় নিয়েছে
আমি বিচ্ছেদ ও বিষাদ বলি—
তুমি আপদ বিহীন মীরার
ভগবান ও ভালবাসা
৪
তুমি প্রিয় তুমি আঁধার মধুর ভালবাসা
গাল মন্দ করো না সখা আমার চির আশা
স্নিগ্ধ তোমার দেহে আমি রম্য তোমার প্রেমে
তোমার টানেই গানের ধরা চিত্তে প্রবল নামে
কাঁদতে থাকি প্রভুর জন্য গোধূল ছোঁয়া বুনি
জীবন জীবন তোমার শরীর আমার দেহেই শুনি
৫
আমি ও তুমি অটুট
ভঙ্গুর নই
হীরের মতন
পদ্ম ও জল একে অপরের
তেমনি
আমিও তোমাতেই হারিয়েছি জানু
ফিরে এস প্রাণ
৬
এস রাজাধিরাজ
দেখ কুঁড়ি ও বিকশিত ফুল
সুগন্ধি আশিরনখ
কত যুগ ও জন্ম অপেক্ষারা
আমার
পূর্ণ কর হরিময় আমি
৭
তীক্ষ্ণ সূঁচে বিদ্ধ করো পোড়াও ভয়াবহে
বাধ্য আমি সোনার কলস বাধ্য নদী মোহে
ভীষণ তুমি রূপের ধারা গহীন গিরিধর
বসুন্ধরার অন্ধকারে মীরার মনোহর
© ভাষান্তর:
রিমি দে
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
লেখা পাঠানোর নিয়ম জানতে চাই ।
ReplyDeleteলেখা পাঠানোর নিয়ম জানতে চাই ।
ReplyDelete